বৃন্দাবনের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি লীলা কাহিনী
শ্রী শ্রী গুরু গৌরাঙ্গ জয়েতঃ
আজ থেকে
প্রায় দুই তিন শত বছর আগে বৃন্দাবনে এক ব্যবসায়ী বাস করত যার ছিল একটি মিষ্টির
দোকান।
তার
দোকানটি ছিল ঠিক বৃন্দাবনের সবচেয়ে বিখ্যাত মন্দির বাঁকে বিহারীর সামনে।
দোকানদার
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত ছিল।
সে
প্রতিদিন খুব রাত করে দোকান বন্ধ করতো, কারণ তার মনের মধ্যে ক্ষুদ্র একটা বাসনা ছিল কোন
না কোন দিন ভগবান #শ্রীকৃষ্ণ
বৃন্দাবনে বিহার করতে করতে তার দোকানে আসবেন এবং তাকে দর্শন দেবেন।
তার এই
বাসনা নিয়ে বহু বছর পার করে দিলো, একসময় দোকানদার বৃদ্ধ হয়ে গেলো কিন্তু তার মনের
আশা সে ছাড়লো না।
সে এখনো
খুব রাত করে দোকান বন্ধ করে এই আশায় কখন যে শ্রীকৃষ্ণ আসেন ঠিক নাই।
প্রতিদিনের
মত দোকাণদার বহু রাত পর্যন্ত দোকানে বসে আছে।
হঠাৎ
একদিন রাতে একটা ছোট্ট ছেলে এই সাত আট বছরের হবে।
মনে
হচ্ছিল কোন ধনী ব্যাক্তির ছেলে।
ধূতি
পড়া, হাতে বালা, চুল কোকরানো, দেখতে অতি সুন্দর।
তার
দোকানের দিকে এগিয়ে আসছে।
দোকানদার
একটু বিস্মিত হল ,এত রাতে
কার ছেলে ঘরের বাইরে রাস্তায় হাটছে।
ছোট
ছেলেটি তার দোকাণেই আসে এবং দোকাণদারের কাছে মতিচূর লাড্ডু চায়।দোকানদার তার
দোকানের ভেতরে গিয়ে দেখল মতিচূড় লাড্ডু নেই।
তাই সে
বালক টি কে বলল রাত হয়ে যাওয়ায় তার কাছে আর লাড্ডু নেই তবে ছানার মিষ্টি আছে তা
নেবে কি না।
বালকটি
রাজি হল ছানার মিষ্টি নিতে।দোকাণদারও তাকে মিষ্টি টি দিল।
দোকাণদার
বালকটি কে জিজ্ঞেস করল তোমার কাছে কী টাকা আছে।
বালকটি
উত্তর দিল না।
দোকাণদার
ভাবল ছোট বালক, তার
থেকে আর টাকা নিয়ে আর কী করবে কতটুকু আর মিষ্টি।
সে আর
কিছু চাইলো না।
কিন্তু
বালক এর মূল্য দিতে চাইলো নিজের হাতের স্বর্ণের বালা দিয়ে।
কিন্তু
দোকাণদার রাজি হল না এবং বলল তার কোন মূল্য চাই না।
অনেকক্ষণ
টানা পোড়ন চললো।
কিন্তু
দোকানদার মূল্য নিতে চাইলো না।
তখন
বালকটি ছুড়ে মারলো তার বালাটি দোকানের ভেতরে।
ঠিক
তখনই দোকানদার সেই বালাটি উঠাতে নিঁচু হল, আর উঠে দেখে বালকটি উধাও!!!!
দূর দূর
পর্যন্ত তার দেখা নেই।
কোথায়
গেল সেই বালক এই প্রশ্ন এবং তার বালাটি নিয়ে সেই রাতে আর ঘুমোতে পারল না বৃদ্ধ
দোকাণদার।
পরদিন
সকালে সম্পূর্ণ বৃন্দাবনে ঘোষিত হল। বাঁকেবিহারী মন্দিরের বিগ্রহের হাতের স্বর্নের
বালা চুরি হয়েছে।
বিগ্রহের
হাতের বালা আর নেই।
এই
বার্তা দোকানদারের কানে এসেও পৌঁছোয়।
এই কথা
শোনার পর দোকানদার তৎক্ষণাৎ সেই বালাটি
সাথে নিয়ে বাঁকে বিহারী মন্দিরের পুরোহিতের কাছে গেল।
পুরোহিত
কে বালাটি দেখালো এবং সব কথা খুলে বললো।
পুরোহিত
বললো এটিই বাঁকে বিহারীর হাতের বালা! এরপর দোকানদার বুঝতে পারল কাল রাতে যেই
ছেলেটি এসেছিল তা আর কেউ নয় স্বয়ং অনাদির আদি সর্বেশ্বর #ভগবান শ্রীকৃষ্ণ।
দোকানদার
কেঁদে ওঠে, বাঁকে
বিহারীর চরণে গিয়ে পরলো এবং আফসোস করলো ভগবান স্বয়ং তার দুয়ারে আসলেন কিন্তু সে চিনতে পারলো না।
কোন মন্তব্য নেই